করোনাভাইরাস কি বাতাস বেয়ে সংবাহিত হতে পারে? ক’দিন আগে থাকতেই, যখন থেকে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে যে, মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে, গবেষকরা এটার উত্তর খুঁজে চলেছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তারা বলছেন এটা কেবল কাশি বা হাঁচির সঙ্গে ছিটকে বেরনো অণুবিন্দু মারফতই প্রবাহিত হয় - হয় সরাসরি, নয় কোনও বস্তুতে লেগে থেকে। কিন্তু বেশ কিছু বিজ্ঞানী বলছেন, বাতাস মারফত করোনাভাইরাস সংবাহিত হওয়ার প্রাথমিক প্রমাণও মিলেছে। আমাদের নিশ্বাসবায়ুতে মিশে থাকা অনেকগুণ সূক্ষ্মতর কণা, যাকে বলে এরোসল, তার মধ্য দিয়েও এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদি সাবধানতা অবলম্বন করা যায়, যেমন ঘরের ভেতর বায়ু চলাচল বাড়ানো, তবে সংক্রমণের আশঙ্কা কমানো যেতে পারে।
২৭ মার্চ তারিখে একটা বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (হু) জানিয়েছে, সার্স-কভ-টু-র বায়ুবাহিত ভাইরাস, এমন মতের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ কিছু নেই। চিকিৎসা-প্রক্রিয়ার কিছু বিশেষ অবস্থায়, যেমন যখন সংক্রামিত রোগীকে কোনও টিউব পরানো হচ্ছে, তেমন সম্ভাবনা অবশ্য থেকে যেতে পারে।
যে-বিশেষজ্ঞরা বায়ুবাহিত শ্বাসঘটিত ব্যাধি এবং এরোসলের সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন তাঁরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বায়ুবাহিত চরিত্রের সর্বজনগ্রাহ্য প্রমাণ জোগাড় করতে কয়েক বছর হয়তো লেগে যাবে, আর তার মাঝখানে হয়তো বহু প্রাণ বিনষ্ট হবে। ‘‘নিখুঁত প্রমাণ পাওয়ার তাগিদ যেন ব্যাপারটা সম্যক বুঝে নেওয়ার পথে কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়,’’ বলেছেন মাইকেল ওস্টারহোলম, মিনিয়াপোলিসের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ইনফেকশাস-ডিজিজ এপিডেমিওলজিস্ট।
‘‘যে-বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে কাজ করে চলেছেন তাঁদের মনের মধ্যে তিলমাত্র সন্দেহ নেই যে ভাইরাসটা বাতাস বেয়ে ছড়ায়’’, বলছেন লিডিয়া মোরাওস্কা, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে কুইনসল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির এরোসল সায়েন্টিস্ট।
জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা যখন বলছেন যে, কোভিড-১৯ বায়ুবাহিত এমন কোনও প্রমাণ নেই, তখন তাঁরা বোঝাতে চাইছেন ভাইরাস-মাখা কিছু কণা যেগুলোর মাপ ৫ মাইক্রোমিটারেরও কম, যাকে বলে এরোসল, সেসবের বাতাসে ভেসে পরিবাহিত হওয়ার কথা। যেসব বিন্দু তুলনায় বড়সড়, সেগুলো কারও হাঁচি বা কাশি থেকে বেরিয়ে এসে সামান্য গিয়েই মাটিতে বা অন্য কোনও বস্তুর ওপর পড়ে আটকে যায়, এটাই সাধারণ ধারণা। ওদিকে এরোসলগুলো বাতাসে ভেসে থাকতে পারে এবং অনেকদূর অবধি যেতে পারে।
বেন কাউলিং হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এপিডেমিওলজিস্ট। তাঁর মতে, বেশিরভাগ সংক্রমণই খুব কাছাকাছি পাল্লার মধ্যে ঘটে। কিন্তু অণুবিন্দু আর এরোসলের মধ্যে ফারাক করলে খুব একটা লাভ হবে না। কেননা, ‘‘ভাইরাস সঙ্গে নিয়ে যেসব কণা বেরিয়ে আসে সেগুলো নানা মাপের হয়। বড়, খুব বড় থেকে একেবারে এরোসলের মতো সূক্ষ্ম কণা অবধি।’’
আর, সার্স-কভ-টু যদি এরোসল পরিবাহিত হতে পারে তবে এ-ও খুবই সম্ভব যে, আবদ্ধ জায়গায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো ক্রমশ জমে উঠতে পারে কিংবা অনেকদূর অবধি পরিবাহিত হতে পারে।
কথা বলা বা নিশ্বাস ছাড়ার সময়েই এরোসলগুলো বেশি করে তৈরি হয়। কাজেই তা হাঁচি বা কাশির থেকেও বেশি বিপজ্জনক। এই মত ব্রিটেনের ইউনিভার্সিট অফ লেস্টার-এর ভাইরোলজিস্ট জুলিয়ান ট্যাং-এর: ‘‘কেউ যখন কাশে, বা হাঁচি দেয়, তখন একটু মুখ ফিরিয়ে নেয়।’’ কিন্তু আমরা যখন কথা বলি বা নিশ্বাস ছাড়ি তখন তো সেটা আর করি না।
ইনফ্লুয়েঞ্জা-আক্রান্ত মানুষদের নিয়ে করা কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে রোগীদের ৩৯ শতাংশই সংক্রামক এরোসল ত্যাগ করছে। আমরা যখনই কারও সঙ্গে একই বাতাসে নিশ্বাস নিই, তারা যে বাতাস ত্যাগ করছে সেটাই আমরা শ্বাসের সঙ্গে টেনে নিই, তখনই বাতাসবাহী সংক্রমণ সম্ভব হয়ে ওঠে।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ এবং ক্ষেত্রসমীক্ষা থেকে এরোসল বেয়ে সার্স-কভ-টু ছড়ানোর স্বপক্ষে মিশ্র প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। চিনের উহানে যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তুঙ্গে, তখন উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট কে. ল্যান, কোভিড-১৯-এর রোগীরা চিকিৎসাধীন রয়েছে এমন হাসপাতাল থেকে এরোসলের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। সেইসঙ্গে এরোসল নিয়েছিলেন দুটো জমজমাট ডিপার্টমেন্ট স্টোরের প্রবেশপথ থেকেও।
ল্যান এবং তাঁর সতীর্থদের লেখা একটা রিপোর্ট (প্রাক-মুদ্রণ অনলাইন প্রকাশ, রিভিউ হয়নি সেটার) বলছে, তাঁরা বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সার্স-কভ-টু-র আরএনএ পেয়েছেন, ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলো থেকেও।
তবে এই পরীক্ষাগুলোয় নিশ্চিত বোঝা যাচ্ছে না এইসব সংগৃহীত এরোসল আমাদের কোষে সংক্রমণ ঘটাতে পারে কিনা। ‘নেচার’ পত্রিকাকে লেখা এক ই-মেলে ল্যান জানিয়েছেন যে, এই গবেষণা দেখাচ্ছে, ‘‘কথা বলা বা শ্বাস ছাড়ার সময় এরোসলের মধ্য দিয়ে সার্স-কভ-টু-র সঞ্চারসম্ভব হলেও হতে পারে, এবং উৎস থেকে কাছে বা দূরে থাকা মানুষের ওপর তার প্রভাবও পড়তে পারে।’’ সাবধান থাকার জন্য সাধারণ মানুষের পক্ষে ভিড় এড়িয়ে চলাই উচিত হবে, তিনি বলেছেন। এবং সবসময় মুখোশ পরা উচিত, যাতে ‘‘বায়ুবাহিত ভাইরাস থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।’’
সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের অস্থায়ী আবাসে যেসব আইসোলেশন রুম ছিল তার বাতাসে সার্স-কভ-টুর সন্ধান করেছিল আর-একটা সমীক্ষা। সেখানে বাতাস বেরনোর পথে রাখা একটা পাখার গা থেকে ভাইরাসটির উপস্থিতি মিলেছিল। তবে, ওই সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত দুজন গবেষক, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের কালীশ্বর মরিমুথি এবং উন টেক এং, নেচার পত্রিকাকে পাঠানো এক ই-মেলে জানিয়েছেন যে, একজন রোগী ওই পাখাটার এত কাছাকাছি ছিলেন যে তাঁর হাঁচি-কাশি থেকে ছিটকে আসা অণুবিন্দু থেকেও সেটা ঘটে থাকতে পারে।
নেব্রাস্কায় আর-এক গবেষকদল তাঁদের সংগৃহীত বাতাসের দুই-তৃতীয়াংশ নমুনায় ভাইরাসের আরএনএ পেয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড-১৯-এ মারাত্মক রকমে আক্রান্ত মানুষদের এবং সেইসঙ্গে বিভিন্ন কোয়ারান্টিনে হালকা আক্রান্ত মানুষদের যেসব আইসোলেশন রুমে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে বাতাস নিয়েছিলেন তাঁরা। বাতাস ঢোকা-বেরনোর পথে যে-জাফরি রাখা ছিল তার গা থেকেও মিলেছে ভাইরাসের লক্ষণ। তবে সেসব জায়গা থেকে পাওয়া কোনও নমুনাই মানুষের কোষকে সংক্রমিত করতে পারেনি। কিন্তু পরীক্ষার মাপজোখ বলছে, ‘‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের দ্বারা ভাইরাল এরোসল নিঃসরণ সম্ভব, এমনকী কাশি না থাকলেও’’, বলেছেন এই গবেষকরা।
হু যে বৈজ্ঞানিক বিবৃতি জারি করেছে তার বক্তব্য হল, এখনও অবধি প্রাপ্ত ভাইরাসের আরএনএ-র নমুনা ‘থেকে বলা যাচ্ছে না যে তাতে সক্রিয় ভাইরাস আছে এবং তা সংক্রমণ ঘটাতে পারে।’’ সেই বিবৃতিতে চিনে তাঁদের নিজেদের তরফে ৭৫০০০ কোভিড-১৯ রোগীর ওপর চালানো সমীক্ষার কথাও আছে, বলা হয়েছে ওতে তাঁরা বায়ুবাহিত সংক্রমণের কোনও প্রমাণ পাননি। বেন কাউলিং বলছেন, ‘‘(হু-র দেওয়া) এই অ্যাসেসমেন্টের স্বপক্ষে দাঁড় করানোর মতো তেমন যথেষ্ট প্রমাণ কিন্তু এতে নেই’’, এবং প্রমাণ মিলছে না বলে এও ধরে নেওয়া যায় না যে সার্স-কভ-টু বায়ুবাহিত নয়। এই অপ্রতুল প্রমাণের যাথার্থ্য সম্পর্কে নেচার-এর তোলা প্রশ্নের কোনও উত্তরহু পাঠায়নি অন্তত এই লেখা প্রকাশিত হবার আগে অবধি।
আমেরিকার বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই ভাইরাসটা এরোসলে ভাসমান থাকতে পারে এবং তার সংক্রামক চরিত্রও বজায় রাখতে পারে কম করে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত। যে-পরিবেশেওই পরীক্ষা করা হয়েছিল সেটা অবশ্য ‘অতিমাত্রায় কৃত্রিম’। কিন্তু তা সত্ত্বেও ‘বাতাস মারফত দূরপাল্লার সংক্রমণ সম্ভাবনা একেবারে শূন্য নয়’’, বলেছেন লস এঞ্জেলেস-এ ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার সংক্রামক ব্যাধি গবেষক জেমি লয়েড-স্মিথ। তিনি এই গবেষণার অন্যতম সহকারী।
সার্স-কভ-টু-কে বায়ুবাহিত বলে মেনে নেওয়ার পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে বলে মনে করেন না লিও পুন, হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট। এমন কিছু পরীক্ষা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন যার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হবে এইসব বিভিন্ন মাপের অণুবিন্দুতে থাকা ভাইরাস সত্যিই রোগ ঘটায়।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের নাক-মুখ থেকে শঙ্কিত হবার মতো মাত্রায় ভাইরাস-পৃক্ত এরোসল বেরয় কি না সেটাও একটা প্রশ্ন, বলছেন লয়েড-স্মিথ। তিনি বলছেন, এই মানুষেরা যখন কথা বলছে, শ্বাস ছাড়ছে, হাঁচি বা কাশি হচ্ছে তাঁদের, তখন বাতাসের নমুনা নেওয়া দরকার, এবং পরীক্ষা করে দেখা দরকার তাতে সত্যিই সংক্রমণ-ক্ষম ভাইরাস আছে কিনা। আর এসব কাজই ‘‘এই ধাঁধাটার আর-একটা বড় অংশ।’’ এরকম একটা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত এক রোগী - যিনি কথা বলছেন, নিশ্বাস ছাড়ছেন, কাশছেন, তাঁর ১০ সেন্টিমিটার দূর থেকে বাতাসের নমুনা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষা থেকে ভাইরাসের আরএনএ-র অস্তিত্ব মেলেনি বটে, কিন্তু গবেষকরা বায়ুবাহিত ভাইরাস সংবহনের সম্ভাবনাকে একেবারে খারিজ করেও দেননি।
আর একটা জরুরি খুঁটিনাটি যেটা এখনও অজানা তা হল, ‘ইনফেকশাস ডোজ’ - কী মাত্রায় ভাইরাস থাকলে তা থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে, বলছেন লয়েড-স্মিথ। অর্থাৎ রোগ ঘটানোর জন্য কতগুলো সার্স-কোভ-টু কণা লাগে? ‘‘নিশ্বাসের সঙ্গে যে এরোসল-রূপী ভাইরাস বেরয় তার ইনফেকশাস ডোজ কত, কী মাত্রায় এলে সংক্রমিত হওয়ার পর্যাপ্ত সম্ভাবনা থাকে সেটা আমরা এখনও জানি না।’’ মাত্রাটা কী তা জানার জন্য পরীক্ষা সাজানোর একটা দায় আছে, জেনেবুঝে মানুষকে নানা মাত্রার আবহে রেখে প্রতি ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার বের করা - এটা একটা অনৈতিক কাজ। বিশেষ করে আমরা যেখানে এ রোগের করাল চরিত্রটা জানি।
ট্যাং একটা ভিন্ন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি বলছেন, সংক্রমণ ঘটানোর জন্য পর্যাপ্ত মাত্রাটা যাই হোক না কেন, আর একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, কতক্ষণ ধরে একজন সেই পরিবেশে থাকছে। একবারের নিশ্বাসে হয়তো তেমন ভাইরাস বেরয় না, কিন্তু ‘‘তুমি যদি (আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির) পাশে থাকো, একই বাতাসে শ্বাস নাও ৪৫ মিনিট ধরে, তাহলে সংক্রমিত হওয়ার মতো পর্যাপ্ত ভাইরাস তোমার মধ্যে ঢুকবে।’’
কিন্তু ক্রমান্বয়ে জমে জমে সংক্রমণ ঘটানোর মাত্রায় পৌঁছতে পারে এমন সামান্য পরিমাণ এরোসল সংগ্রহ করা – আর সেটাও সঠিক বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা আর তাপমাত্রার মিশেল মেনে, ‘এক চরম কঠিন কাজ’, বলেছেন মোরাওস্কা। ‘‘আরও ডেটা দরকার সেটা তো বলাই যায়, কিন্তু সেটা জোগাড় করা যে খুব কঠিন তাও স্বীকার করতে হবে।’’ট্যাং বলছেন, বাতাস বেয়ে এই সংক্রমণ ছড়ায় সেটাই ধরে এগোনোই ভালো – যদি না পরীক্ষায় সেটাকে ভুল প্রমাণ করা যায়। কিন্তু উল্টোটা ধরে এগোনো ঠিক হবে না। মানুষ তাহলেই সাবধান থাকতে পারবে, নিজেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করবে।
মোরাওস্কা বলছেন, ঘরের ভেতরকার বায়ু চলাচল বাড়ানো দরকার আর একই বাতাস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করাটা কমানো দরকার। তাহলেই ভেতরকার বাতাসে এরোসলের ঘনত্ব কিছু কমানো সম্ভব, ঝেঁটিয়ে বের করে দেওয়া সম্ভব। সাবধানের মার নেই, কাজেই ঘরে বসে মিটিং করা বন্ধ রাখাই শ্রেয়।
ইতিমধ্যে ল্যান এবং তাঁর সতীর্থরা জনসাধারণকে মুখোশ পরে থাকতে বলছেন, তার মধ্য দিয়ে সংক্রমণের মাত্রা নামানো যাবে বলেই তাঁদের অভিমত। এশিয়ার বহু দেশেই মুখোশ একটা আটপৌরে উপকরণ। আমেরিকায় এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশে অবশ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা সাধারণ মানুষকে মুখোশ পরা থেকে নিবৃ্ত রাখতে চায়। তার একটা কারণ হল, এই উপকরণটির সরবরাহ কম এবং স্বাস্থ্যকর্মীদেরই সেটা আগে দরকার। চেক রিপাবলিক এবং স্লোভাকিয়া অবশ্য বাড়ির বাইরে বেরলেই সকলের মুখোশ পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ট্যাং মনে করেন, এরা ঠিক কাজই করেছে। ‘‘ওরা সাউথ-ইস্ট এশিয়ার ধারাটা নিয়েছে, যদি প্রত্যেকে মুখোশ পরে তাহলে এটা দোফলা অর্থাৎ দ্বিগুণ সুরক্ষা দেবে।’’
অবশ্য, কাউলিং-এর মতে, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে এমনমানুষ এবং সহজে আক্রান্ত হতে পারে এমন জলগোষ্ঠীর জন্য মুখোশের পর্যাপ্ত সরবরাহ সুনিশ্চিত করার পরেই কেবল সকলকে তা পরতে বলা উচিত।
[অনুবাদ: যুধাজিৎ দাশগুপ্ত]
Is the coronavirus airborne? Experts can’t agree শিরোনামে Dyani Lewis-এর এই লেখাটি বেরিয়েছিল নেচার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে, ২ এপ্রিল ২০২০ (doi: 10.1038/d41586-020-00974-w)